গান শোনা যাবে কি?
হাদীস শাস্ত্রে এমন কিছু নির্দেশনা আছে, যা মুসলমানদের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি করেছে যে, ইসলামে গান-বাজনা বা সঙ্গীত হারাম। শত শত বছর মুসলিম সমাজ এই ধারাতেই চলে এসেছে। এরমধ্যে কুরআনের সুলালিত তেলওয়াত ও অন্যান্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদান থেকে মুসলিম সমাজ তাদের প্রয়োজনীয় বিনোদনের ব্যবস্থা করে নিয়েছে।
বর্তমানে আমরা এমন এক পরিবেশে আছি, যেখানে সঙ্গীত আমাদের চারপাশে বিপুল প্রভাব সৃষ্টি করেছে এবং এই প্রভাবকে এড়ানোও কঠিন।
সুতরাং, আমরা যদি এখন এই ধারনাতে বসে থাকি, তবে অনেক মুসলমানই এখন ফাঁদে পড়ে যাবে। কেননা, সেচ্ছায় না শুনলেও অনেক সময় অনিচ্ছায়ও আমাদের চারপাশের বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সঙ্গীত অহরহ আমাদের কানে প্রবেশ করে। তাছাড়া, হারামের এই ধারনা আমাদেরকে এমন এক উগ্রবাদী মনোভাবের দিকে নিয়ে যাবে, যাতে করে মেরে পিটে যেভাবেই হোক চারপাশের সমাজকে পরিবর্তন করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্তি পোষণ করতে পারে।
সুতরাং, আমাদের দেখা উচিত সঙ্গীতের হারাম হওয়া বিষয়ে আসলে শরীয়তে কি বলা হয়েছে।
ইসলামে কোন কিছু হারাম হওয়ার জন্য হয় কুরআনে সরাসরি আয়াতের উল্লেখ থাকবে নাহয় রাসূল (সা.) এর স্পষ্টভাবে সহীহ কোন হাদীসের বিবরণ থাকবে। কোন একটি বস্তু মানুষকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে এবং সেটির কোন স্পষ্ট বিবরণ থাকবে না, তা হতে পারেনা।
কুরআনে সঙ্গীতকে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে কোন প্রকার আয়াত নাযিল হওনি।
অন্যদিকে, হাদীসে যে বিবরণ এসেছে, তাতে তাদের নিন্দা করা হয়েছে, যারা কুরআনের আয়াত থেকে মানুষকে দূরে রাখে। এমন নয় যে, এক ব্যক্তি কুরআন শোনে ও পড়ে এবং পাশাপাশি সঙ্গীতও শোনে, তার সঙ্গীত শোনা হারাম।
অর্থাৎ, যে সঙ্গীত মানুষকে আল্লাহর কথা থেকে দূরে নিয়ে যায়, তাই নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
সুতরাং, যেহেতু সরাসরি হারাম হওয়ার বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের কোন বিবরণ নেই, ফলে সঙ্গীতকে আমরা হারাম বলতে পারিনা।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।