Questioner
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
Question

জীবনভর কাজ করার কোন ইচ্ছা আমার নাই, কী করা উচিৎ?

Counselor
আয়শা মোহাম্মদ
Answer

আপনি প্রশ্ন করেছেনঃ 

আমি বিশ বছর বয়সী ভবিষ্যৎ সচেতন একজন ছাত্র এবং আমি আমার সারা জীবন শুধু কাজ করে কাটাতে  চাইনা। আমি আমার চারপাশের লোকজন, আমার পরিবার, মামা-চাচা, তাদের সন্তান সবাইকে ৯টা-৫টা এমনকি কখনো কখনো ১২ ঘন্টাও কাজ করতে দেখি, এবং আমি এগুলোর কোন মানে খুঁজে পাইনা। কেন আল্লাহ  সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এই কারাগারের ব্যবস্থা করেছেন? আমি কাজ করেছি শুধুমাত্র সপ্তাহান্তে, এমনকি তখন ও আমি দীর্ঘ সময় একটানা কাজ চালিয়ে যেতে পারতাম না। আমি তখন আমার চাচার দোকানে কাজ করতাম যখন তিনি মাত্র কয়েক দিনের জন্য আমাকে ডেকেছিলেন, এবং সেখানে কয়েক ঘন্টা কাজ করতাম (১১টা-৭টা), আর আপনি জানেন? আমি এটা ঘৃণা  করতাম। এখন আমি আমার ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বছর শেষ করেছি এবং এই সেমিস্টারের পরে আমাকে পার্ট-টাইম চাকরি পেতে হতে পারে তবে আমি স্নাতকের পর ৪০ বছরের জন্য ৯টা-৫টা পুরো সময় কাজ করার চিন্তা সহ্য করতে পারছিনা! কখনও কখনও আমি আশা করি আমি শুধু এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাই অথবা গ্রামাঞ্চলে যাব এবং একটি খামার স্থাপন করব যেখানে আমি মুক্ত হতে পারি এবং সহজ জীবন যাপন করতে পারি; কিন্তু আমার পরিবার সে অনুমতি দেবেনা, তারা আমাকে হীন হিসাবে দেখবে।
তারা ইউকেতে বসবাস করার জন্য পাকিস্তানে এসেছিল এবং তারা ক্রমাগত কাজ করছেন, কাজ করছেন, এবং  কাজ করছেন। কখনও কখনও আমি এমনকি আমি আইএসআইএস যোগদান করার জন্য ইচ্ছুক হয়েছিলাম আমি জানি যে তারা খারাপ মানুষ কিন্তু অন্তত তাদের স্বাধীনতা আছে। যখনই আমি আইএসআইএসকে আধিপত্যের জন্য তাদের সংগ্রামে হারতে দেখি, আমি অন্তরে তাদের জন্য গভীর ঘৃণা অনুভব করি,  আমি আশা করি আল্লাহ শীঘ্রই এই পৃথিবীকে শেষ করে দিবেন। আমি জানি যে অধিকাংশ ক্ষুদ্র লক্ষণ গুলো পূর্ণ হয়েছে এবং আমি মনে করি যে আল্লাহ ঈসা (আ.) এবং ইমাম মাহদীকে পাঠিয়ে এই জগতে পরিবর্তন আনতে চান, তাই আমি শীঘ্রই তা ঘটতে দেখতে চাই। এমনকি আমি সালাত আদায় করিনা; শুধুমাত্র জুম’আর নামাযটাই আদায় হয়। হয়তো আমি ভেবেছিলাম আমি ৯টা-৫টার জীবন যাপন করবো, কিন্তু আমার কোনও আবেগ নেই যার দ্বারা আমি কাজ করতে চাই। আমি ওয়েব ডিজাইনার হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি জানিনা কেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়কেই ফিরে আসার জন্য বেছে নিলাম।

আমার কাছে বিষয়টি আকর্ষণীয় মনে হয়েছে, কিন্তু যদি না হয়? আমি যদি এমন চাকরিতে যোগ দেই যা আমি ঘৃণা করি তবে কি হবে ? রুটিনের এই পুনরাবৃত্তি আমাকে অসুস্থ করে তোলে। আমি মনে করি আমি এই পরিবারের সব চেয়ে খারাপ ব্যক্তি। আমার মা একজন একক সন্তানের মা এবং তিনি দিনে ১০ ঘন্টা কাজ করেন।

আমার অবস্থাটা কেমন তা কি আপনি জানেন? আমি তার টাকায় জীবন যাপন করতে ভালোবাসি, কিন্তু তারপরও আমি তা পছন্দ করিনা, আমাকে এই দ্বিতীয় বছর শেষ করে একটি পার্ট-টাইম চাকরি পেতে হতে পারে কিন্তু আমি এখনো এমন কাজকে ঘৃণা করি। আমি আশা করি আমার পরিবার শুধু সারা জীবন ধরে কাজ করেই যাবেনা। এখন আমি একটি ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছি, আমি একজন সফল ই-কমার্স ব্যক্তির কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি কিন্তু কিছু একটা আমাকেএমনকি দোকান তৈরি করতেও বাধা দিচ্ছে; ব্যর্থতার চিন্তা, এই ব্যবসায়ে সফল হওয়ার চিন্তা ভাবনা করার পরে এই কারাগার জীবন ধারা গ্রহণ করতে ইচ্ছা করছে না। তাই আমি জানিনা কি করতে হবে, আমাকে সাহায্য করুন।

 

আসসালামু আলাইকুম,  

আপনার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি আপনার উদ্বেগ বুঝতে পারছি, আপনি প্রতিদিন চারপাশের মানুষদেরকে ক্রমাগত কাজ করতে দেখেন যা প্রায় দীর্ঘ সময় জুড়ে চলে এবং আপনার কাছে বিষয়টিকে একটি কারাগার সমতুল্য মনে  হয়। আপনি বলেছিলেন যে আপনার পরিবার ইউকেতে শুধুমাত্র "তাদের পুরো জীবন কাজ করতে" আসার ব্যাপারটি আপনি ঘৃণার চোখে দেখেন। তারপরও, আপনার স্বদেশে লোকেরা পুর্বে কি করত? অবশ্যই, সেখানে চিকিৎসা সুবিধা, বিদ্যালয়, দোকান ইত্যাদি ছিল যেখানে সমাজের কল্যাণে অবদান রাখার সময় গুলোতে লোকেরা তাদের পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিল।

একথা সত্য যে অধিকাংশ মানুষ নিজেদের এবং তাদের পরিবারের ব্যায় ভার বহন করার জন্য কাজ করে। তারা প্রায়ই কাজ পরিপূর্ণ ভাবে শেষ করার জন্য দীর্ঘসময় জুড়ে কাজ করে থাকেন। যদিও এটি আপনার কাছে ন্যায্য  মনে হয়না, আপনি কি এমন কোনও বিশ্ব বা সমাজের কল্পনা করতে পারেন যেখানে কেউ কাজ করেনা? আপনি আপনার খাদ্য কোথা থেকে কিনবেন? মুদি দোকানে কাজ করার কেউ থাকবেনা, কেউ খাদ্য উৎপাদন বা পশু পালন করবে না, আর কেউ এটি দোকানে নিয়ে যাবেনা। উপরন্তু, যদি আপনি বা আপনার ভালোবাসার কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন ও চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন হয়, তবে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সেবা কে দিবে? যেহেতু কেউ কাজ করবেনা তাই কোন ডাক্তারও থাকবে না।

আপনিই ভেবে দেখুন ভাই, আমাদের জন্য কাজ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি বললেন যে, আপনি আপনার বাবা এবং আপনার চাচার জন্য ঘৃণা সত্ত্বেও কয়েক দিন কাজ করেছিলেন। কুরআনে এমনকি অনেক হাদিসেও রয়েছে  যা কেবল আমাদের কঠোর পরিশ্রম করার নির্দেশ দেয়না, বরং তারা অলস, অ-উৎপাদনশীল এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাদের যে সব নিয়ামত দিয়েছেন তা অপচয় করার জন্য তাদের শাস্তির বিধানও করা হয়েছে। কুরআন মজীদে বলা হয়েছে,

এবং মানুষ তাই পায়, যা সে করে, [ সুরা নাজম ৫৩:৩৯ ]
এমনকি নবী মুহাম্মদ (সা।) নিজেও কাজ করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তাঁর স্ত্রী খাদিজার ব্যবসায়ের দেখাশোনা করতেন। তিনি একজন মেষপালক ছিলেন; তিনি জমি চাষ করেছেন, এবং অবশ্যই, দাউয়াহ এর কাজ করেছেন পূর্ণ সময় জুড়ে।

তাই ভাই, আমি বিনীতভাবে বলি যে আপনি এই বিষয়টির প্রতি নজর দিন যে, যদি আপনি আমাদের নবী (সাঃ) কে ভালোবাসেন এবং তাঁর পথে চলার ইচ্ছা করেন, তাহলে কিভাবে আপনি কাজ না করার কথা চিন্তা করবেন যেখানে আপনার প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজেই খুব কঠিন পরিশ্রমের কাজ করেছেন?

আমি আপনাকে কিছু বিষয়ে গভীর চিন্তা ভাবনা করতে উৎসাহ দিচ্ছি, আপনি কেন কাজ করতে চান না তা খুজে বের করুন। আপনি কি কি কারণে কাজ করতে চাননা সেগুলির একটি তালিকা তৈরি করুন এবং কেন আপনি  এই কারণ গুলোকে যুক্তিযুক্ত মনে করেন তার বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করুন। আপনি কেন কাজ করা উচিত তার কারণ গুলির আরেকটি তালিকা তৈরি করুন এবং লিখে রাখুন আপনার বিস্তারিত বর্ণনা এবং যে উপকার গুলো আপনিপাবেন ইনশাআল্লাহ । একটি কর্মময় জীবন নির্বাচন করতে এই সংক্ষিপ্ত ভিডিওটি দেখুন। আমি বিশ্বাস করি এটি আপনাকে আপনার কারণ গুলো এবং সমস্যাগুলোকে সমাধান করতে অনেক সহায়তা করবে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এই জীবনে একজন কর্মমুখর মানুষ সম্পর্কে এবং অন্যের বোঝা হয়ে না থাকার বিষয়ে কুরআনে যা বলেছেন তা পড়ে দেখুন। অলসতা, বিষণ্নতা, অথবা কোন কর্মমুখর জীবনের জন্য আপনি এই জীবনে কী করতে চান তা সত্যিই জানেন না বলেই কি কাজের ব্যাপারে আপনার এই অনীহা কিনা তা খুঁজে বের  করার চেষ্টা করুন। আপনি যদি হতাশ বোধ করেন তবে অনুগ্রহ করে আপনার এলাকায় কোন কাউন্সিলিরের সন্ধান করুন।

যতই আইএসআইএসের সাথে থাকবেন, ততই আপনি ইসলাম এবং আল্লাহ এর বিরুদ্ধে যাবেন এমনকি তাতে খুব মারাত্মক পরিণতি ঘটবে, আপনি কি মনে করেন যে এটি কোন সহজ জীবন যাপনের উপায়? না। এমনকি আপনি নিজেও বললেন যে তারা "খারাপ মানুষ" ছিল। তবে কেন আপনি "খারাপ মানুষদের” একজন হতে চান? আপনি কি তাদের প্রকৃত স্বাধীন মনে করেন? না। প্রকৃত পক্ষে, তারা যা বলবে আপনি যদি তা করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তারা আপনাকে খুনও করতেপারে।

এ হচ্ছে এক বন্দী জীবন। যদিও আমি তাদের কাঠামোর সম্পর্কে অনেক কিছু জানিনা, তবে যে কোন  "সেনাবাহিনী" র সাথে তুলনা করে অনুমান করে বলছি, আপনি সম্ভবত খুব তাড়াতাড়ি সকালে উঠবেন, খুব বিরক্তিকর দিন শেষে একটু বিশ্রাম পাবেন। এছাড়া, সম্ভবত আপনি এমন কিছু করবেন যা আপনি করতে চাননা বা এমন বিষয় যা অন্যকে আঘাত করে এবং আপনি ছেড়ে যেতে চান (অনেক কাজ করে) তবেও আপনি তা পারবেন না। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি যে তিনি   যেন তার রহমত ও অনুগ্রহ দিয়ে এই অতি বিপজ্জনক এবং ক্ষতিকর ফাঁদ সম্পর্কে আপনার মনে সঠিক ধারণা দেন এবং আপনার হৃদয় এবং মনকে সরল পথে স্থির করেন।

ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে গেলে, আপনি বর্তমানে স্কুলে আছেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন এবং  পড়ছেন, বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করছেন, পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করাও কাজ। সুতরাং, আপনি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করছেন; যাই হোক, আপনি আর্থিক উপার্জন করছেননা কিন্তু জ্ঞানের সুবিধাগুলো লাভ করছেন এবং ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে একটি ভালকাজের সুযোগ তৈরি করছেন যা আপনাকে একটি ভাল বেতন এনে দেবে। আপনি যদি আপনার নির্বাচিত কোর্স নিয়ে অখুশি হন তবে, আমি আপনাকে ভাই হিসেবে পরামর্শ দিচ্ছি যে আপনি ক্যারিয়ার সেন্টারের পরিসেবা গুলো সন্ধান করুন। এই কেন্দ্রগুলোতে, তারা আপনাকে পরীক্ষা এবং মূল্যায়নের মাধ্যমে এমন তথ্য দিবে যা আপনাকে এমন কাজ / ক্যারিয়ার খুঁজে পেতে সহায়তা করবে যা আপনি উপভোগ করতে পারবেন।

আমাদের জন্য কাজ উপভোগ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক,  দায়িত্বশীল মুসলমান হিসাবে, আমরাও জানি যে কিছু কাজ উপভোগ্য না হলেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার জন্য করা উচিত। যে কারও জন্যে কাজ করা নিজের ও পরিবারের ভার বহন করার পাশাপাশি আমাদের সমাজে অবদান রাখাটাও ইবাদাতের মধ্যে পড়ে। আপনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ হলে, আপনার কাজ না করার কোন কারণ নেই। অনেক অসুস্থ বা পংগু ব্যাক্তিও কাজ করছেন, যা অনেকে ভাবতেও পারেনা। অতএব আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনার পালনকর্তার কোন নিয়ামত আপনি অস্বীকার করবেন?

আপনি বলেছেন আপনার মা একজন সমাজকর্মী এবং প্রায়শই দিনে ১০ঘন্টা খুব কঠিন পরিশ্রম করেন। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তার প্রচেষ্টাতে বরকত দান করুন। যাই হোক, একজন বাড়ন্ত যুবক হিসাবে, আপনি আপনার মায়ের কিছু চাপ ও কষ্ট লাঘবের জন্য চেষ্টা করতে পারেন যাতে তিনি তার পরিবারের ভাল জীবন যাপনের ব্যবস্থা করতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে, আপনার মাকে আর্থিক ভাবে সাহায্য না করার বিষয়টি আপনার জন্য বেশ স্বার্থপর একটি সিদ্ধান্ত ছিল যেহেতু তিনি আপনাকে জীবন দিয়েছেন এবং প্রচুর পরিমাণে ত্যাগ স্বীকার করেছেন যেব আপনি কিছু পেতে পারেন এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন।
ভাই, আমি বিনীতভাবে পরামর্শ দিচ্ছি যে আপনি আপনার অগ্রাধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার জীবন পুনঃমূল্যায়ন শুরু করবেন। আপনি কি এমন একটি জীবন চান যেখানে আপনি কাজ না করে অন্যের দয়ার উপর নির্ভরশীল থাকবেন? আপনি বলেছিলেন আপনি সব বাদ দিয়ে গ্রামে বাস করতে চলে যেতে চান এবং একটি খামার নির্মান করতে চান। যাই হোক, আপনার এখনও জমি এবং খামারবাড়ি (বা এটি নির্মাণের জন্য) টাকা প্রয়োজন হবে, এবং আপনার এখনও পণ্য, পরিবারের সামগ্রী, খাদ্য, ফসল প্রয়োজন এবং আরো অনেক কিছুই কিনতে টাকা প্রয়োজন হবে। উপরন্তু, আপনি যদি বিয়ে করেন তাহলে আপনার পরিবারের যত্ন নিতে অর্থ প্রয়োজন হবে, যদিনা আপনি একক জীবনের একটি জীবন পরিকল্পনা সাজিয়ে রাখেন।

আপনি যদি এমন জীবন (কাজ না করা) নির্বাচন করেন, তাহলে আপনি কি করে ব্যয় করবেন? অবশ্যই, আপনি অনেক সামাজিক যোগাযোগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন যার ফলে আপনি ভেঙ্গে পরবেন। আপনি ঘুরতে যেতে পারবেন না, ভ্রমণ করতে পারবেন না, এমনকি হজ্জ্ব করতে পারবেননা কারণ আপনার কাছে কোন অর্থ নেই। এছাড়াও, আমি মনে করি কিছুদিন পরে আপনি খুব বিরক্ত হবেন এবং কিছুতেই নিজেকে আর বাঁচিয়ে রাখতে চাইবেন না।  

ভাই, দয়া করে আপনার চিন্তা ভাবনার গুরুতর প্রকৃতি বিবেচনা করুন। আমি আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি যে আপনি একজন ভাল পরামর্শদাতা এবং সেই সাথে ক্যারিয়ার কাউন্সেলরের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন যিনি এই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে আপনাকে পরিচালনা করবেন। বিভিন্ন ধরণের কাজের সময় সহ বিভিন্ন ধরনের ক্যারিয়ার এবং কাজগুলো নিজেই করতে পারবেন। উদাহরণ স্বরূপ, উদ্যোক্তারা যারা নিজের ব্যবসা চালায়, যেমনটি আপনি শুরু করার কথা ভাবছেন, তা সম্ভবত আরো বেশি সময় কর্মঘন্টা হিসেবে কাটাতে হবে। কিন্তু আপনি এমন জায়গায় কাজ করতে পারেন যা আপনাকে বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। ইনশাআল্লাহ এসব উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আপনি নিজের পথ খুঁজে পাবেন যার জন্য আপনাকে সৃষ্টি করা  হয়েছিল, এবং আপনার সেই কাজের মধ্যে আপনার হারানো আবেগ খুঁজে বের করতে পারবেন যার কথা আপনি বলছিলেন।

যখন কাজ সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা আসে, তখন ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে তা প্রতিহত করুন। উদাহরণ স্বরূপ, যদি মনে হয় "আমার বাবার কাজ করাকে আমি ঘৃণা করি", তাহলে "আমি আমার বাবার সাহায্য করতে পেরে খুশি এবং তা আমাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আমাকে দায়ীত্বশীল ব্যক্তি হিসাবে প্রস্তুত করবে।"

যদি আপনার মনে হয় "এটি একটি কারাগার, এবং তা তেমন সুখকর নয়" তবে নিজেকে বলুন, "হালাল পদ্ধতিতে কাজ করা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালাকে খুশি করার নামান্তর, অন্যদের সাহায্য করতে এবং দেশে বসবাসের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সৎ অর্থ উপার্জন করাও আপনার জন্য সম্মানজনক"। প্রিয় ভাই, এটা আমার মনে হয় যে আপনি যত বেশি কাজ করবেন, তত বেশি আপনি কাজ করতে উৎসাহ পাবেন। যেহেতু আপনি কাজ করেননা,  তাই কঠোর পরিশ্রমের কথা চিন্তা করাটা কিছুটা ভয়ঙ্কর অনুভূতি হতে পারে, যখন প্রকৃতপক্ষে আপনি অনেক লাভবান হবেন এবং সেই সাথে নিয়ামতের ভাগীদার হবেন যদি একজন মুসলিম হিসেবে কাজটি যথাপোযুক্তভাবে নিয়ম মেনে করেন তবে তা আরও বেশি লাভবান হবেন।

 

সবশেষে, আপনি বলেছেন যে "এমনকি আমি প্রার্থনাও করিনা; আমি শুধুমাত্র শুক্রবার প্রার্থনায় যাই"। আমি বিনীতভাবে আপনাকে আল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে পরামর্শ দিচ্ছি। মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করুন, কুরআন পড়ুন আল্লাহর রহমত ও সাহায্যের জন্য দুআ করুন। নিজেদের গণ্ডির মাঝে ও এর বাইরে যেতে প্রস্তুত তরুণ পুরুষদের জন্য ইসলামী ক্লাস বা গবেষণা গ্রুপে যোগদিন। যারা ইসলামী নীতি অনুসরণ করে এবং আপনাকে আপন করে নেয় এমন ভাইদের সাথে ভাল সঙ্গ গড়ে তুলুন। ইনশাআল্লাহ আপনি যতই আল্লাহর কাছে পৌঁছাবেন, আপনি যত বেশি প্রার্থনা করবেন এবং সফল জীবনের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার কাছে বেশি করে দোয়া করুন, যতই আপনি এভাবে এগিয়ে যাবেন ততই ইসলামের আদর্শের সাথে পরিচিত হবেন এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করে তুলতে পারবেন।

আমরা আপনার সফলতার জন্য দোয়া করি, দয়া করে আপনার অবস্থাটা আমাকে জানাবেন।

উৎস

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।