যায়েদ বিন সাবেতঃ ছোট্ট বালকের সাহসের গল্প
ইসলামী বার্তা ডেস্ক
Published: 2022-03-14 20:44:41 BdST | Updated: 2024-03-29 14:16:47 BdST
বাতাসে যুদ্ধের ঘ্রাণ। হিজরী দ্বিতীয় বর্ষ। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য, হক কায়েম আর বাতিল নিরসনের প্রথম লড়াইয়ে প্রস্তুত হচ্ছে লড়াকু কিছু আল্লাহপ্রাণ মুসলিম মুজাহিদ। মুজাহিদ সারিতে দেখা যাচ্ছে ছোট্ট এক প্রাণ , দেখে মনে হয় তাঁর ছোট্ট শরীরের চেয়ে যেনো তরবারীটাই বড়।
বয়স কত বার বা তেরোর ঘরে। প্রতিভা আর বুদ্ধিতে চোখ জ্বলজ্বল করা বালক সে। ওইটুকুন মনে সাহস আর প্রজ্ঞার কমতি নেই মোটেও।
রাসূল সা এগিয়ে গেলেন ছোট্ট মানুষটার দিকে, মুচকি করে হেসে দিলেন সাহসের শিখা দেখে।
আলতো করে জানতে চাইলেন- ছোট্ট মুজাহিদের মনের আকুতি?
ছোট্ট মন টি সাহসে অনেক বড় , দীপ্ত কণ্ঠে বলে উঠলো-
ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আমার জীবন আপনার জন্য কুরবানীকৃত।, আপনার সাথে থাকার ও আপনার পতাকাতলে থেকে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার অনুমতি দিন আমায়।
রাসূল সা ভালবাসা দিয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন তার । বললেন , বড় হলে অবশ্যই নিতেন। ছোটদের জন্য এখনো ফরজ হয়নি জিহাদ।
বালক টি বিষণ্ণ মনে তরবারী টানতে মায়ের কাছে ফিরে এলো।
বলছি সেই সাহসী বালকের কথা, যিনি ছিলেন রাসূল সা এর খুব প্রিয় এক জন সাহাবা যায়েদ ইবনে সাবেত।
হযরত যায়েদ বয়স স্বল্পতার কারণে যুদ্ধে যেতে না পারলেও রাসূল সা এর নৈকট্য লাভে ছিলেন সদা তৎপর । মা নাওয়ার বিনতেঁ মালেক ছেলের আগ্রহের কথা বুঝতে পেরে নিজ গোত্রের সাথে পরামর্শ করলেন।
তখন তারা নবীজীর কাছে গিয়ে বললেন-
হে আল্লাহর রাসূল! এই আমাদের ছেলে যায়েদ বিন সাবেত। সে কুরআন থেকে ১৭ টি সূরাহ মুখস্ত করেছে। সে শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করে , যেমনিভাবে আপনার কাছে নাযিল হয়েছে। সে এখন থেকে আপনার সাথে থাকতে চায়, নৈকট্য চায়।
নবীজী তার তেলাওয়াত শুনলেন, মুগ্ধ হলেন এবং আনন্দিত হলেন। বললেন- আমি চাই তুমি ইহুদীদের ভাষা শিখে নাও। কারণ আমি যা বলি সে ব্যাপারে তাদের আমি নিরাপদ মনে করিনা।
অতঃপর যায়েদ শিখলেন ইবরানী ও সুরিয়ানী ভাষা। অতঃপর তিনি হয়ে গেলেন রাসূলের দোভাষী,অতঃপর ক্রমে তিনি হলেন কাতেবে অহী, কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সাথে সাথেই তিনি তা লিখে ফেলতেন।
এভাবে হযরত যায়েদ কুর আনের বিশেষ জ্ঞানে পারদর্শী হয়ে গেলেন। হযরত আবু বকরের খিলাফত কালে যারা কুরআন একত্রিকরণের কাজ করেছেন তিনি ছিলেন সবার অগ্রণী । হযরত উমর তার খিলাফত কালে বলেছেন-
হে লোক সকল! কেউ কুরআন সম্পর্কে জানতে চাইলে যেনো যায়েদ ইবনে সাবেতের কাছে যায়!
সুবহানাল্লাহ! এর চেয়ে মর্যাদার আর কীই হতে পারে।
হযরত হাসসান বিন সাবেত কবিতায় বলেছেন-
হাসসান ও তার পুত্রের চেয়ে কে আছে কবিতার ?
যায়েদ ইবনে সাবেতের পরে কে আছে ভাব, চেতনার ?
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: