মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এবং এটি হ্যাক হলে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু লক্ষণ দেখে আপনি সহজেই বুঝতে পারেন, আপনার ফোনটি হ্যাক হয়েছে কিনা। নিচে ফোন হ্যাকের কিছু সাধারণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো:
১. অস্বাভাবিক ব্যাটারি ড্রেন
ফোনের ব্যাটারি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত শেষ হলে বা ফোন গরম হতে থাকলে, এটি হতে পারে ফোনে ম্যালওয়্যার বা স্পাইওয়্যার ইনস্টল হওয়ার লক্ষণ। স্পাইওয়্যার ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করে, ফলে ব্যাটারি দ্রুত শেষ হতে পারে।
২. ফোনে অজানা অ্যাপস বা ফাইল
যদি আপনি ফোনে এমন কোনো অ্যাপ বা ফাইল দেখতে পান যা আপনি কখনও ইনস্টল করেননি, তবে তা হ্যাকিংয়ের ইঙ্গিত হতে পারে। ফোনে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অনেক সময় ম্যালওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায়, যা অজান্তেই ফোনের তথ্য সংগ্রহ করে।
৩. ফোনের পারফরম্যান্স ধীর হয়ে যাওয়া
ফোন যদি হঠাৎ খুব ধীর হয়ে যায়, তাহলে এটি হ্যাকিংয়ের একটি লক্ষণ হতে পারে। ম্যালওয়্যার এবং স্পাইওয়্যার ফোনের রিসোর্স ব্যবহার করে এবং ফোনকে ধীর করে দেয়।
৪. অদ্ভুত মেসেজ বা নোটিফিকেশন আসা
অনেক সময় ফোন হ্যাক হলে অজানা নম্বর থেকে মেসেজ বা নোটিফিকেশন আসে, যা স্প্যাম লিঙ্কের মতো দেখতে পারে। এসব লিঙ্কে ক্লিক না করে দ্রুত ফোনটি স্ক্যান করা উচিত।
৫. ডেটা ব্যবহারে অস্বাভাবিকতা
যদি ডেটা ব্যবহারে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখতে পান, অর্থাৎ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ডেটা খরচ হচ্ছে, তবে এটি ম্যালওয়্যার বা স্পাইওয়্যার ইনস্টল হওয়ার কারণে হতে পারে।
৬. ফোনের সেটিংস পরিবর্তন হওয়া
ফোনের সেটিংসে কোনো পরিবর্তন যদি আপনার অনুমতি ছাড়াই ঘটে, তবে এটি হ্যাকিংয়ের লক্ষণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ফোনের স্ক্রিন ব্রাইটনেস, ব্যাকগ্রাউন্ড বা অন্য কোনো সেটিংস পরিবর্তিত হয়, তবে সতর্ক হওয়া উচিত।
৭. ফোনের মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা সক্রিয় থাকা
কিছু স্পাইওয়্যার ফোনের ক্যামেরা বা মাইক্রোফোন সক্রিয় রেখে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। যদি আপনি ফোনে ক্যামেরা বা মাইক্রোফোনের অস্বাভাবিক ব্যবহার লক্ষ্য করেন, তবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা হতে পারে।
ফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে নিচের কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে:
- অজানা অ্যাপস এবং ডাউনলোড ফোল্ডার চেক করে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বা ফাইল ডিলিট করুন।
- ফোনের সব অ্যাপ এবং অপারেটিং সিস্টেম আপডেট রাখুন।
- শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং দুই-স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করুন।
- প্রয়োজনে ফোনটি ফ্যাক্টরি রিসেট করুন, তবে এটি করার আগে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ব্যাকআপ নিয়ে রাখুন।
মোবাইল ফোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে সতর্ক থাকা জরুরি। হ্যাকিংয়ের এসব লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকলে ফোনের নিরাপত্তা রক্ষা করা সহজ হবে।