ড. মরিস বুকাইলি, একজন বিশিষ্ট মুসলিম বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক, তাঁর সাড়া জাগানো বই “বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞান” রচনা করেন, যা ধর্ম, বিজ্ঞান এবং মানব জীবনের মধ্যে সম্পর্ককে আলোচিত করে। ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত এই বইটি বৈজ্ঞানিক তথ্য, ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং মানব ইতিহাসের মধ্যে একটি গভীর সংযোগ স্থাপন করেছে।
বইয়ের মূল বিষয়বস্তু
ড. বুকাইলি তাঁর এই বইতে বাইবেল এবং কোরআনের বিভিন্ন বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করেছেন এবং তা আধুনিক বিজ্ঞান ও গবেষণার সাথে তুলনা করেছেন। এই বইটির মূল দিকগুলো হল:
১. ধর্ম ও বিজ্ঞান
বুকাইলি ধর্ম এবং বিজ্ঞানকে পরস্পরবিরোধী হিসেবে নয়, বরং পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে দেখার চেষ্টা করেছেন। তিনি তুলে ধরেছেন যে কোরআনের অনেক তথ্য আধুনিক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
২. ঐতিহাসিক ঘটনার বিশ্লেষণ
বইটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বাইবেল এবং কোরআনে উল্লেখিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার বিশ্লেষণ। তিনি গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মাধ্যমে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করেছেন।
৩. বিজ্ঞানসম্মত তত্ত্ব
বুকাইলি কোরআন এবং বাইবেলে বর্ণিত কিছু বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের সঙ্গতি ও বৈপরীত্য নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, ধর্মীয় গ্রন্থে উল্লেখিত অনেক বিষয় আধুনিক বিজ্ঞান দ্বারা সমর্থিত।
বইটির প্রভাব
ড. মরিস বুকাইলির “বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞান” বইটি মুসলিম ও খ্রিস্টান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংলাপের সূচনা করেছে। বইটি ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি আগ্রহী ব্যক্তিদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক মনোভাব গ্রহণের উদ্বুদ্ধ করেছে। এটি বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সংলাপ এবং বোঝাপড়া তৈরি করতে সহায়ক হয়েছে।
ড. মরিস বুকাইলির “বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞান” বইটি কেবল ধর্মীয় বা বৈজ্ঞানিক পাঠকদের জন্য নয়, বরং যারা মানব ইতিহাস, বিজ্ঞান ও ধর্মের সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করছেন তাদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বইটি ধর্মীয় মূল্যবোধ, বৈজ্ঞানিক চিন্তা এবং মানবিক অনুসন্ধানের একটি প্রশংসনীয় উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।