জান্নাতে যাওয়ার জন্য কোন পীর এর মুরিদ হওয়া আবশ্যক কিনা?

জবাব:

পরম করুনাময় ও পরম দয়াময় মহান আল্লাহর তায়ালার নামে । সমস্ত প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা আল্লাহর জন্য। সালাম ও দরূদ বর্ষিত হোক রাসুলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি।

ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। একটি সরল ও সহজ ধর্ম, যা শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ অনুসরণের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। 

জান্নাতে যাওয়ার মূল শর্তসমূহ:

কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে জান্নাতে যাওয়ার প্রধান শর্তগুলো নিম্নরূপ:

তাওহীদ বা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস:
এক আল্লাহকে উপাস্য হিসেবে মানা এবং তাঁকে কোনো অংশীদার না করা (সূরা আন-নিসা: ৪৮)।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণ:
আল্লাহ বলেছেন, “যে আমার রাসূলের অনুসরণ করে, সে-ই সফলকাম” (সূরা আলে ইমরান: ৩১)।

সৎকর্ম:
নামাজ, রোজা, যাকাত, হজ্ব ইত্যাদি ইসলামের ফরজ আমল পালন করা (সূরা আসর: ৩)।

পাপ থেকে বিরত থাকা ও তাওবা:
আল্লাহ বলেন, “তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তাওবা করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো” (সূরা আন-নূর: ৩১)।

পীরের মুরিদ হওয়া কি আবশ্যক:

কোনো পীরের মুরিদ হওয়া জান্নাতে যাওয়ার জন্য আবশ্যকীয় শর্ত নয়। তবে একজন পীর বা আলেমের কাজ হলো মানুষকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথে আহ্বান করা, কুরআন ও হাদিসের শিক্ষা দেওয়া। যদি কোনো পীর এমন কিছু শর্ত আরোপ করেন যা কুরআন ও হাদিসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় বা তাদেরকে আল্লাহর বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করেন, তবে তা ইসলামসম্মত নয়।

তবে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, যে পীরকে অনুসরণ করা হবে, তিনি যেন রাসূল (সা.)-এর সবচেয়ে বড় সুন্নাহ বা দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুক্ত থাকেন। কারণ রাসূল (সা.)-এর আগমনের উদ্দেশ্য ছিল দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা বা ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। যেমন পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

‘তিনি আল্লাহ, যিনি তাঁর রাসূলকে পাঠিয়েছেন সঠিক পথনির্দেশ ও সত্য দ্বীন (পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা)-সহ, যাতে তিনি তা সকল বিধানের ওপর বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। সাহায্যকারী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।’ (সুরা ফাতহ, আয়াত: ২৮)।

সতর্কতাঃ

• যদি কোনো ব্যক্তি দাবি করে যে, তার মুরিদ না হলে জান্নাতে যাওয়া যাবে না, তবে তা শিরকের শামিল হতে পারে।
• আল্লাহর রহমত অর্জন করা নির্ভর করে তাওহীদ, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ এবং নেক আমলের উপর, কোনো ব্যক্তি বা পীরের উপর নয়।

জান্নাতে যাওয়ার জন্য কোনো পীরের মুরিদ হওয়া আবশ্যক নয়। তবে জ্ঞানী ও আল্লাহভীরু ব্যক্তির কাছে ইসলাম শেখা এবং তাঁদের পরামর্শ গ্রহণ করা উপকারী হতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যে, তারা কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে শিক্ষা দেন।

আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলার তাওফীক দান করুন। আমীন।