নিশ্চয় আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা ততক্ষণ পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করার চেষ্টা করে। (আল কোরআন, আয়াত ১৩:১১)

২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার

নবী (সাঃ)-এর দেওয়া স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেশ

ইসলামী বার্তা ডেস্ক

নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, যার মধ্যে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা সম্পর্কিত অনেক মূল্যবান উপদেশ রয়েছে। তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করলে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নবী (সাঃ) বলেছেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক। তিনি নিয়মিত ওজু করতেন, দাঁত পরিষ্কারের জন্য মিসওয়াক ব্যবহার করতেন এবং হাত ধোয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন।

পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। নবী (সাঃ) বলেছেন, মানুষ তার পেটের চেয়ে খারাপ কোনো পাত্র ভর্তি করে না। প্রয়োজন মতো কিছু খাবারই তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট। তবে যদি খেতেই হয়, তবে এক-তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখবে।

সুস্থ ও শক্তিশালী থাকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নবী (সাঃ) বলেছেন, শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে দুর্বল মুমিনের চেয়ে উত্তম ও প্রিয়। তাই তিনি শরীরচর্চা, সাঁতার, ঘোড়দৌড় এবং তীরন্দাজির মতো শারীরিক কসরতকে উৎসাহিত করতেন।

সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। তিনি ভোরে ওঠার অভ্যাস করতেন এবং বলতেন, ভোরের সময় বরকতময়। প্রভাতের সময়ে কাজ করলে শরীর সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি। নবী (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ যে রোগ দিয়েছেন, তার প্রতিষেধকও দিয়েছেন। তিনি কালোজিরা, মধু ও হিজামা (শিঙ্গা লাগানো) চিকিৎসার উপকারিতার কথা বলেছেন।

খাবারের আগে ও পরে হাত ধোয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, খাবারের আগে ও পরে হাত ধোয়া দারিদ্র্যতা দূর করে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

রাগ নিয়ন্ত্রণ করা মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এক সাহাবী নবী (সাঃ)-এর কাছে উপদেশ চাইলে তিনি বললেন, রাগ কোরো না। বেশি রাগ হলে ওজু করা ও বসে পড়া সুন্নাহ।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া শরীরের জন্য উপকারী। তিনি রাতের প্রথম ভাগে ঘুমিয়ে ফজরের আগে উঠতেন। দুপুরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম (কায়লুলাহ) নিতেন, যা শরীরের জন্য ভালো।

হাঁটার অভ্যাস করা সুস্থতার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। নবী (সাঃ) অনেক হাঁটতেন এবং দ্রুত হাঁটতেন, যা শরীরচর্চার অন্যতম উপায়।

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সবসময় ইতিবাচক থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নবী (সাঃ) দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য ধরতে বলেছেন এবং দোয়ার মাধ্যমে মানসিক শান্তি কামনা করেছেন।

নবী (সাঃ)-এর এসব স্বাস্থ্যবিষয়ক সুন্নাহ অনুসরণ করলে আমাদের জীবন আরও সুন্দর ও সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।

সাম্প্রতিক পোষ্ট

পোষ্টটি শেয়ার করুন
Scroll to Top