উত্তর প্রদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মুসলিমদের টার্গেট করছে খ্রিস্টান মিশনারিরা

ইসলামী বার্তা ডেস্ক

ভারতের মুসলিমরা বিভিন্ন দিক থেকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। একদিকে, হিন্দু উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো তাদের “ঘর ওয়াপসি” প্রচারণা চালিয়ে মুসলমানদের হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, খ্রিস্টান মিশনারিরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মুসলমানদের আর্থিক সাহায্য ও অন্যান্য সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ধর্মান্তরিত করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে, বিশেষ করে নাট সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মান্তরের প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, সীতাপুর জেলার হরগাঁও, কাটসারিয়া (সুধোলি) ও কমলাপুরে ছয়টি মুসলিম পরিবার খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে, যা মিশনারি গোষ্ঠীগুলোর প্রভাবের ফল বলে দাবি করা হচ্ছে। একইভাবে, আম্বেদকর নগর ও সুলতানপুরে দশটি মুসলিম নাট পরিবার আর্থিক সংকটের কারণে ধর্মান্তরিত হয়েছে। ধর্মান্তরের লক্ষণগুলির মধ্যে ইসলামিক প্রতীক ত্যাগ করে যীশু খ্রিস্টের প্রতিকৃতি স্থাপন করা অন্যতম। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এই বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বলরামপুর ও শ্রাবস্তীর সীমান্তবর্তী এলাকায় পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ, যেখানে বিপুলসংখ্যক নাট সম্প্রদায়ের সদস্য খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। ধর্মান্তরিতরা মাসিক উপবৃত্তি, বিনামূল্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকেন। বলরামপুরের ধর্মান্তরিত আসলাম খান জানিয়েছেন, তার পরিবার আগে টিকে থাকার জন্য লড়াই করত, কিন্তু মিশনারি সহায়তার ফলে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

প্রাক্তন গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি) কর্মকর্তা সন্তোষ সিং জানিয়েছেন, নেপাল সীমান্তবর্তী গোরখপুর বিভাগের মহারাজগঞ্জ জেলায় ধর্মান্তরের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ফেরেন্দা তহসিলের যোগীবাড়ি বনের শত শত কারওয়াল পরিবার খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছে। মাথরানগরে একটি সম্পূর্ণ কারওয়াল বসতি ধর্মান্তরিত হয়েছে। তারা নিয়মিত রবিবারের প্রার্থনায় অংশ নেয়, খ্রিস্টান উৎসব উদযাপন করে এবং সন্তানদের কনভেন্ট স্কুলে পাঠিয়ে মিশনারিদের কাছ থেকে ধারাবাহিক আর্থিক সহায়তা পায়।

অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মুসলিমদের আর্থিক প্রলোভনের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত করার বিষয়টি গুরুতর সমস্যা, যা দ্রুত সমাধানের প্রয়োজন। মুসলিম ধর্মীয় সংগঠন ও সম্প্রদায়ের নেতাদের উচিত এই বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা করা এবং ইসলামী সচেতনতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।

বর্তমানে মুসলমানরা একদিকে হিন্দু চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছে, অন্যদিকে খ্রিস্টান মিশনারিরা তাদের আর্থিক দুর্বলতা ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবকে কাজে লাগিয়ে ইসলাম থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। এই দ্বৈত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী সম্প্রদায়গত অংশগ্রহণ, অর্থনৈতিক সহায়তা উদ্যোগ ও ধর্মীয় শিক্ষা কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাম্প্রতিক পোষ্ট

পোষ্টটি শেয়ার করুন
Scroll to Top