মাথিলদা হেলার
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচির মন্তব্য: ইসরায়েলিদের গ্রিনল্যান্ডে পাঠান, ফিলিস্তিনিদের গাজায় থাকতে দিন| তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনিদের বদলে ইসরায়েলিদের উৎখাত করার চেষ্টা করুন, তাদের গ্রিনল্যান্ডে নিয়ে যান, যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যায়।”
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ইসরায়েলিদের গ্রিনল্যান্ডে পাঠানো উচিত। তার এই মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় এসেছে, যেখানে তিনি গাজার ফিলিস্তিনিদের জর্ডান বা মিসরে পুনর্বাসনের কথা বলেছিলেন। এই মন্তব্য তিনি তেহরানে স্কাই নিউজকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে করেন। আরাকচি ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছেন, তারা যেন মার্কিন সমর্থন থাক বা না থাক, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কথা না ভাবে। “আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর কোনো হামলা হলে তাৎক্ষণিক ও কঠোর জবাব দেওয়া হবে,” তিনি স্কাই নিউজকে বলেন। “কিন্তু আমি মনে করি না তারা এতটা পাগলামী করবে। কারণ এতে গোটা অঞ্চল ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।”
ইরান দাবি করে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে, গত সপ্তাহে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানান, ইরানের কাছে বর্তমানে প্রায় ২০০ কেজি ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা ৬০% বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধ—যা ৯০% অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়ামের খুব কাছাকাছি। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে দেওয়া এক বক্তব্যে ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) পরিমাপক অনুযায়ী, তারা পাঁচটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সপ্তাহে ওভাল অফিসে বলেন, “আশা করি, এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে, যাতে এটি নিয়ে আরও দূর পর্যন্ত ভাবতে না হয়। এটি কূটনৈতিকভাবে সমাধান হলে সত্যিই ভালো হয়।” আরাকচি স্কাই নিউজকে জানান, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ফিরতে পারে, তবে এর জন্য আরও শক্তিশালী আশ্বাস প্রয়োজন। তিনি ট্রাম্পের ২০১৮ সালে ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির মাধ্যমে ইরান তার পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ফলে ইরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বৃদ্ধি করেছে।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের আঞ্চলিক মিত্র হামাস ও হিজবুল্লাহ সম্পর্কেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু তারা পুনর্গঠিত হচ্ছে। কারণ এটি শুধুমাত্র একটি সংগঠন নয়, এটি একটি আদর্শ, একটি উদ্দেশ্য, যা সবসময় টিকে থাকবে।
সূত্র: জেরুজালেম পোষ্ট
