ইসলামী বার্তা ডেস্ক | ২২ নভেম্বর, ২০২৪
- প্রশ্নকারী: ফয়েজ উদ্দিন
- প্রশ্ন:আমার প্রশ্নটি হলো- একজন ব্যক্তি যিনি দুর্নীতিপরায়ণ এবং সুদ গ্রহণ করেন, তার ইমামতিতে নামাজ পড়া ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ কিনা? এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা প্রয়োজন।
জবাব:
পরম করুনাময় ও পরম দয়াময় মহান আল্লাহর তায়ালার নামে । সমস্ত প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা আল্লাহর জন্য। সালাম ও দরূদ বর্ষিত হোক রাসুলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি।
ইসলামে নামাজের ইমামতিতে কিছু বিশেষ নীতিমালা ও শর্ত রয়েছে। একজন ব্যক্তি যদি ইসলামের মৌলিক বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেন, যেমন দুর্নীতি করা বা সুদ গ্রহণ করা, তবে তার ইমামতির বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি নিন্মরূপ:
দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তির ইমামতি:
- ইসলামে দুর্নীতি করা একটি বড় গুনাহ (পাপ) এবং এটি আল্লাহর অবাধ্যতার অন্তর্ভুক্ত। একজন দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি যদি তওবা না করেন, তবে তার ইমামতি করা উচিত নয়।
- তবে, যদি মুসল্লিদের মধ্যে কোনো বিকল্প ইমাম না থাকে এবং সেই ব্যক্তি নামাজের আরকান (নামাজের বিধি-বিধান) সঠিকভাবে পালন করেন, তাহলে তার পেছনে নামাজ পড়া ফিকহ অনুযায়ী বৈধ, তবে এটি নিন্দনীয় (মাকরূহ) হিসেবে গণ্য হবে।
সুদ গ্রহণকারী ব্যক্তির ইমামতি:
- সুদ গ্রহণ ইসলামি শরিয়াতে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ এবং এটি হারাম (অবৈধ)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুদকে হারাম করেছেন এবং সুদ খাওয়াকে আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার সমান বলে বর্ণনা করেছেন (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৯)।
- সুদ গ্রহণ করা ব্যক্তির ইমামতির বিষয়েও একই ধরনের ফিকহি নীতিমালা প্রযোজ্য। যদি সে ব্যক্তি তার গুনাহর জন্য অনুতপ্ত হয়ে তওবা না করে, তবে তার ইমামতি করা উচিত নয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে নামাজের বৈধতা:
- ইমাম যদি নামাজের আরকান ঠিকমতো পালন করেন, তবে মুসল্লিদের নামাজ আদায় হয়ে যায়।
- তবে, পাপী ব্যক্তির পেছনে নামাজ পড়া নিরুৎসাহিত করা হয় এবং সম্ভব হলে এমন ব্যক্তিকে ইমাম হিসেবে মনোনীত করা উচিত যিনি আল্লাহভীরু ও ন্যায়পরায়ণ।
দুর্নীতিপরায়ণ এবং সুদ গ্রহণকারী ব্যক্তির পেছনে নামাজ পড়া ফিকহ অনুযায়ী বৈধ হলেও এটি মাকরূহ বা নিন্দনীয়। মুসল্লিদের জন্য উচিত এমন একজন ইমাম নির্বাচন করা যিনি চরিত্রবান এবং ইসলামি জীবনযাপনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তবে, যদি বিকল্প না থাকে এবং ইমাম নামাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করেন, তাহলে তার পেছনে পড়া নামাজ শুদ্ধ বলে গণ্য হবে। সামগ্রিক বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা ভাল জানেন।