গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন চলছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। চলছে ইসরায়েলি বর্বরতা। এই বর্বরতা, নির্বিচার মৃত্যু ও ধ্বংসস্তূপের মাঝেও, চিত্রকর্মের মাধ্যমে নীরব প্রতিবাদ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন মায়সা ইউসেফ নামের এক ফিলিস্তিনি নারী চিত্রশিল্পী।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ইসরাইলজুড়ে আকস্মিক রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল দ্রুত পাল্টা আক্রমণে যায়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ইসরাইলের হামাসবিরোধী অভিযানের নামে গাজায় নির্বিচার বোমা বর্ষণ চলছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখেরও বেশি। একই সঙ্গে, গাজার ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। বিদ্যুৎ, পানি, খাবার, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। এই মানবিক সংকটের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারী ও শিশুরা।
এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও জীবনের ছোঁয়া নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনি চিত্রশিল্পী মায়সা ইউসেফ। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি বাড়িকে স্টুডিও বানিয়ে শিশুদের জন্য আর্ট সেশন পরিচালনা করছেন। মায়সার চিত্রকর্মগুলো ধ্বংসের মাঝেও প্রতিভা ও সৃষ্টিশীলতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলি হামলার কারণে গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং পুরো অঞ্চল তীব্র খাদ্য ও পানি সংকটে ভুগছে। ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের ধারণা।
ইসরাইলের হামলার নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ বাড়ছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও ইসরাইল তা উপেক্ষা করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গাজা উপত্যকায় এই পরিস্থিতি বিবেকবান মানুষদের গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। ধ্বংসের মাঝে মায়সা ইউসেফের মতো মানুষদের সৃষ্টিশীল উদ্যোগ এই লড়াইয়ে আশার আলো জ্বালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা