বুরাক বির এবং নেকভা তাস্তান সেভিঞ্চ
পবিত্র কোরআনের কপি প্রকাশ্যে পোড়ানোর জন্য পরিচিত সালওয়ান মোমিকা বুধবার রাতে সুইডেনে তার অ্যাপার্টমেন্টে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।
৩৮ বছর বয়সী সালওয়ান সাবাহ ম্যাটি মোমিকার মৃতদেহ সোডারতেলিয়ে শহরের নিজ ঠিকানায় পাওয়া গেছে। স্টকহোম পুলিশের মুখপাত্র জানান, চল্লিশের কোঠায় বয়স এমন এক ব্যক্তিকে তার অ্যাপার্টমেন্টে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় এবং দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ নিশ্চিত করে যে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন এবং ঘটনাটি হত্যা হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ডেনিশ পুলিশকেও এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, এই গুলির ঘটনা হয়তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল।
এদিকে, সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন ঘটনাটিকে “অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর” বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে গভীর তদন্ত চালাচ্ছে।
তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এটি কোনো বিদেশি শক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ার ঝুঁকি অবশ্যই রয়েছে।”
ইরাকি খ্রিস্টান সালওয়ান মোমিকা ২০২১ সালে সুইডেনে বসবাসের অনুমতি পান এবং এরপর থেকে তিনি দেশটির বিভিন্ন জনসমাগমস্থলে প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানোর জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে, মোমিকা এবং সালওয়ান নাজেম চারবার “জাতিগত বা জাতীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক অপরাধ” করার দায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত হন।
সুইডিশ অভিবাসন সংস্থা মোমিকার আসল আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য পাওয়ার পর তার বসবাসের অনুমতি বাতিল করে। এরপর, ২০১৮ সাল থেকে সুইডেনে বসবাসকারী মোমিকা ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ নরওয়েতে চলে যান, কিন্তু সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সুইডেনে ফেরত পাঠানো হয়।
সুইডেন ও ডেনমার্কে “বাক স্বাধীনতার” অজুহাতে কোরআন পোড়ানোর ঘটনাগুলো মুসলিম দেশগুলোর তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার মধ্যে কূটনৈতিক মিশনের ওপর হামলার ঘটনাও রয়েছে। এরপর, মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ডেনমার্ক ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি আইন পাস করে, যা জনসমাগমস্থলে কোরআন পোড়ানোকে অবৈধ ঘোষণা করে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি