নিশ্চয় আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা ততক্ষণ পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করার চেষ্টা করে। (আল কোরআন, আয়াত ১৩:১১)

২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার

শিশুদের ইসলামি শিক্ষায় মাতা-পিতার ভূমিকা

শিশুদের ইসলামি শিক্ষায় মাতা পিতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামি শিক্ষা শিশুদের মৌলিক আচারআচরণ, নৈতিকতা, মূল্যবোধ, এবং ধর্মীয় জ্ঞান প্রদান করে, যা তাদের জীবনব্যাপী পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে। এই প্রক্রিয়ায় মাবাবার ভূমিকা ব্যাপক এবং গভীর। তাদের দায়িত্ব নিম্নরূপ:

ইসলামি শিক্ষার বীজ রোপণ: মাবাবাই প্রথমে তাদের সন্তানদের কাছে ইসলামি শিক্ষা পৌঁছানোর মাধ্যম। শিশুকে নামাজ, রোজা, দানখয়রাত, তাওহীদ, প্রাথমিক ইসলামিক শব্দ যেমনআলহামদুলিল্লাহ“, “বিসমিল্লাহশেখানোর কাজ প্রথমে তারা শুরু করেন।

ধর্মীয় আচরণ মূল্যবোধের শিক্ষা: ইসলাম শিশুকে সদাচরণ, ন্যায়পরায়ণতা, সহানুভূতি, অন্যকে সম্মান করা, সত্য বলার শিক্ষা দেয়। মাবাবার আচরণ এবং মূল্যবোধ শিশুদের উপর গভীর প্রভাব ফেলে, তাই তাদের নিজস্ব জীবনযাপনও এই মূল্যবোধ অনুযায়ী হওয়া উচিত।

নাম তাওহীদ শিক্ষা: ছোটবেলা থেকেই শিশুকে একত্ববাদের (তাওহীদ) শিক্ষা দেওয়া জরুরি। মাবাবা তাদের সন্তানকে আল্লাহর অস্তিত্ব সৃষ্টির রহস্যের প্রতি আগ্রহী করতে পারেন, যাতে তারা ছোটবেলাতেই আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা আনুগত্য সৃষ্টি করতে পারে।

রোল মডেল হওয়া: মাবাবা নিজেদের ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করে (যেমন, নামাজ পড়া, সৎ কাজ করা, নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা) শিশুর কাছে ভালো রোল মডেল হয়ে উঠতে পারেন। শিশুরা তাদের পরিবেশ কাছের মানুষদের আচরণ দেখে শেখে, তাই বাবামায়ের ধর্মীয় আচরণ তাদের জন্য শিক্ষামূলক।

প্রার্থনা ধর্মীয় অনুশীলন: নামাজের প্রতি আগ্রহ জন্মানো এবং শিশুদের ছোটবেলা থেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব শেখানো খুবই প্রয়োজন। মাবাবা তাদের সন্তানকে সঠিকভাবে নামাজ, সিয়াম, দানখয়রাত ইত্যাদি ইসলামি বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য উৎসাহিত করতে পারেন।

ধৈর্য, পবিত্রতা চরিত্রের উন্নয়ন: ইসলামে যে সব বৈশিষ্ট্য গুণাবলী যেমন ধৈর্য, সততা, পবিত্রতা, দয়া, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ইত্যাদি গুণাবলী শেখানো হয়, তা মাতাপিতার সঠিক দৃষ্টান্তে বাচ্চাদের মধ্যে প্রতিফলিত হয়।

ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো: শিশুদের ইসলামী শিক্ষা দানের জন্য মাদ্রাসা বা ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোও মাতাপিতার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এটা শিশুকে ইসলামিক আইন, কুরআন এবং হাদিস শিক্ষায় সাহায্য করতে পারে।

মাবাবা যদি নিজেদের জীবন ইসলামিক আদর্শ অনুযায়ী পরিচালনা করেন, তাহলে তারা সন্তানদের জন্য সেরা শিক্ষক হতে পারেন। শিশুর পক্ষে ইসলামের সঠিক শিক্ষা গ্রহণ এবং ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধি পেতে মাতাপিতার ইতিবাচক ভূমিকা অপরিহার্য।

সাম্প্রতিক পোষ্ট

পোষ্টটি শেয়ার করুন
Scroll to Top