মুসলিম জাতি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকা এবং গজবে পতিত হওয়ার অন্যতম কারণ অনৈক্য
তারেক হাসান
Published: 2024-08-31 12:40:14 BdST | Updated: 2024-10-16 06:28:40 BdST
বর্তমানে অন্যান্য জাতির তুলনায় মুসলিম জাতি বিভিন্ন ররকম সমস্যায় আচ্ছন্ন। অথচ মুসলিমদের সঠিক অবস্থান হল, তারা নিজেরা তো উন্নত থাকবে, তার পাশাপাশি তারা অমুসলিমদেরকে সঠিক পথ দেখাবে, তাদের শিক্ষা, জ্ঞান বিজ্ঞান শেখানে, প্রয়োজনে বিপদাপন্ন হলে সাহায্য করবে। কিন্তু সেই পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে তাদের বিপরীত অবস্থা। তাছাড়া ইসলাম থাকলে ঐ দেশ সমূহে শান্তি বিরাজ করবে, কিন্তু বিপরীতে তারা শান্তির খোঁজে ইউরোপ আমেরিকাতে পাড়ি জমায়।
মুসলিম উম্মাহর বর্তমান দুর্দশার একটি বড় কারণ হচ্ছে নিজেদের মধ্যে অহংকার বশত ক্ষুদ্র বিষয়ে অনৈক্য। আজ মুসলিম সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী, সম্প্রদায় এবং দল নিজেদের ব্যক্তিগত মতামত ও বিশ্বাসকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, ফলে তারা একে অপরের শত্রু হয়ে উঠছে। এ ধরনের বিভাজন শুধুমাত্র মুসলিম জাতির শক্তিকে ক্ষুণ্ন করছে না, বরং এটি আল্লাহর নির্দেশিত ঐক্যবদ্ধ জীবনের বিপরীত। কুরআনে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন, "তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং বিচ্ছিন্ন হয়ো না।" (সূরা আল-ইমরান: ১০৩)। কিন্তু অহংকার এবং ক্ষুদ্র বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে মুসলিমরা নিজেদের দুর্বল করছে এবং শত্রুর হাতে বারবার পরাজিত হচ্ছে।
মুসলিমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে, তাহলে তারা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকবে। ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব অত্যন্ত মহান, এবং এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরজ বিধান। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মুসলিমদের একত্রিত থাকা এবং পারস্পরিক সহানুভূতি প্রদর্শন করা অত্যাবশ্যক। হাদিসে বলা হয়েছে, “মুমিনরা একে অপরের প্রতি দয়ালু, তারা একটি দেহের মতো, যখন একটি অঙ্গ আঘাত পায়, তখন পুরো শরীর কষ্ট অনুভব করে।” কিন্তু যদি মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ বজায় রাখে, তাহলে আল্লাহর করুণা তাদের ওপর নেমে আসবে না। আল্লাহ ঐক্যবদ্ধ ও সংহত জাতির ওপর নিজের অনুগ্রহ বর্ষণ করেন, আর যারা অনৈক্যের পথে হাঁটে, তাদেরকে তিনি নিজের রহমত থেকে দূরে রাখেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রকৃত সুন্নাহ থেকে দূরে সরে যাওয়াও মুসলিমদের এই পতনের অন্যতম কারণ। রাসূল (সা.) আমাদেরকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, পারস্পরিক সহানুভূতি এবং জালিমের বিরুদ্ধে কঠোরতা প্রদর্শনের শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করলেই মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে। রাসূল (সা.) শুধু নামাজ, রোজা বা অন্যান্য ইবাদতই শিখাননি, বরং একটি সংগঠিত ও শক্তিশালী উম্মাহ গঠনের নির্দেশনাও দিয়েছেন। আজ যদি মুসলিমরা তাঁর এই আদর্শ থেকে সরে দাঁড়ায়, তাহলে তারা কখনোই প্রকৃত মুসলিম উম্মাহর মর্যাদায় ফিরতে পারবে না।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: