ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা: একটি সার্বজনীন আন্দোলন প্রয়োজন


ড. মোহাম্মদ গিত্রিফ
Published: 2023-11-14 22:54:19 BdST | Updated: 2024-09-28 09:20:14 BdST

ইসরাইল আগুন নিয়ে খেলছে এবং প্রতি ১০ মিনিটে একটি ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করছে। গাজা থেকে উদ্ভূত ভয়ঙ্কর গ্রাফিক চিত্রসমূহ দেখে মুসলিম এবং অমুসলিম উভয়েরই বিবেকবোধে প্রচুর অশ্রু ঝরছে। তার পরও একটি সুসংবাদ হচ্ছে এই যে, তাদের মৃতরা জাহান্নামে জ্বলবে, যেখানে আমাদের শহীদরা সরাসরি জান্নাতে যাবে। দ্বিতীয় কথা হলো, সম্মেলন-সেমিনার করে স্বাধীনতা অর্জিত হয় না। স্বাধীনতা মানুষের জীবন বিলিয়ে দিয়ে কেনা হয়।

স্পষ্টতই, ফিলিস্তিনিরা খুবই দুর্বল এবং তাদের কাছে ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তির শক্তি, এর বিশাল সম্পদ এবং সম্পূর্ণ পশ্চিমা সমর্থনের বিপরীতে কোনো সম্পদ নেই। তবুও আমাদের আফগানিস্তানে তালেবানের সাম্প্রতিক উদাহরণ ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমেরিকা ২০ বছর ধরে তাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তারপরও তাদের দোসর আশরাফ ঘানির পুতুল সরকারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে একটি শান্তি চুক্তি করে এবং দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল।


হামাস এবং সমস্ত ফিলিস্তিনিরা এখন পর্যন্ত অতুলনীয় স্থিতিস্থাপকতা, ধৈর্য এবং প্রতিরোধের দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। পশ্চিমা সরকারগুলো এখনো অন্ধভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করছে, কিন্তু তাদের সাধারণ মানুষ অন্ধ নয়। তারা ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকারের জন্য পশ্চিমা বিশ্বের সমস্ত বড় শহর এবং রাজধানীতে বিক্ষোভ করছে, স্লোগান দিচ্ছে:  মুক্ত প্যালেস্টাইন চাই।


কেউ কেউ এমনকি কংগ্রেস হলে যুদ্ধপ্রবণ জো বাইডেন এবং তার পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকেও কথায় আক্রমন করেছে; এমনকি তারা ইসরায়েল অভিমুখী অস্ত্রবাহী কনভয়কে থামানোর চেষ্টা করেছে। ফিলিস্তিনের জন্য একটি ভাল সংবাদ হল প্যালেস্টাইনপন্থী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ইউরোপের বিভিন্ন শহরে ২২টি ইহুদি দল রয়েছে যারা ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরোধিতা করছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দাবি করছে। স্লোগান দিচ্ছে: "এই বর্বরতা আমাদের নামে যেন না করা হয়"।

একজন গুরুত্বপূর্ণ হামাস নেতা মুসা আবু মারজুকের ভাইরাল ভিডিওতে তিনি স্পষ্ট দুঃখ ও অসহায়ত্ব নিয়ে বলেন, "আমরা জানি যে কিছু আরব শাসক গোপনে ইহুদিবাদী শত্রুকে বলেছে যে হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করবে না।" ডানপন্থী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজেই একটি ভিডিওতে আরব স্বৈরশাসকদের কাছ থেকে এই ধরনের মর্মান্তিক বার্তা পাওয়ার দাবি প্রকাশ করেছেন।

আরব বাদশাহ এবং স্বৈরশাসকরা এখন পর্যন্ত তাদের নাগরিকদের সাথে যা করেছে তা বিবেচনা করলে দেখা যাবে যে তাদের পক্ষ থেকে এধরনের আচরন আশ্চর্যজনক নয়।


ফিলিস্তিনিরা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে তা একটি বাস্তব দৃষ্টান্ত যে কিভাবে আরব বিশ্ব এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে চলছে। যে কারণে আমেরিকান এবং ইসরায়েলি বোমারু বিমানসমূহ আরব দেশগুলোর আকাশসীমার উপর দিয়ে উড়তে পারছে।


আবু মারজুকের বক্তব্য যদি কোনোভাবে অতিরঞ্জিত বলে কেউ মনে করে তাহলে মিশর ও জর্ডানের মতো আরব প্রতিবেশী দেশগুলো আমেরিকা ও ইসরায়েলিদের তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে বাধা দিচ্ছে না কেন? এটি একটি মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। পরবর্তীতে ওমান বাধা দিয়েছিল, কিন্তু তা ২৫ দিনের সংঘাত এবং নৃশংস ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ৪০ শতাংশ বোমাবর্ষণে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া এবং ৪ হাজারের বেশি শিশুসহ ১১ হাজার জনের বেশি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করার পর। আফসোস!

ফিলিস্তিনিরা ভালো করেই বোঝে যে এটা তাদের লড়াই এবং তাদের নিজেদেরকেরই এই লড়াই করতে হবে। তুর্কি একটি চ্যানেল দ্বারা আয়োজিত একটি টক শোতে, ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি আরব শাসকদের পক্ষ নেওয়া একজন উকিলকে খুব উপযুক্তভাবে জবাব দিয়েছিলেন, যখন তিনি গাজায় যা ঘটছে তা নিয়ে মায়াকান্না করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বললেন, "তোমাদের আমাদের জন্য চোখের জল ফেলার দরকার নেই, কারণ আমরা তোমাদেরকে মৃত হিসাবে দেখি এবং মৃত ব্যক্তিরা চোখের জল ফেলে না।"

কয়েকটি দেশ কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। কলম্বিয়া জায়নবাদী দেশের সাথে তার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। বলিভিয়া এবং চিলিও এটি অনুসরণ করেছে। বেলজিয়ামের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলেছেন। তুরস্ক ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আনার উপায় খুঁজছে এবং তেল আবিব থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেছে।

পশ্চিমা মিডিয়া আউটলেটসমূহ সেইসাথে ভারতীয় অ্যাঙ্কররা যথেষ্ট সময় ব্যয় করে ইসরায়েলের যুদ্ধবাজ জেনারেল, ইসরায়েলি মন্ত্রী বা অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ইসরায়েলি ব্যক্তিদের সাথে সোৎসাহে যোগাযোগ করে তাদের সাক্ষাত্কার নিচ্ছে। তাদের মন্তব্যের মাধ্যমে তারা ইসরাইল-পন্থী এবং ফিলিস্তিনি-বিরোধী প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছে, ফিলিস্তিনিদেরকে চরমপন্থী, সন্ত্রাসবাদী বা জিহাদি হিসাবে চিহ্নিত করছে, এবং ইচ্ছাকৃতভাবে স্বাধীনতার জন্য ন্যায়সঙ্গত ফিলিস্তিনি সংগ্রামকে উপেক্ষা করছে। মূলধারার মিডিয়াসমূহ এখনও এই পাপকাজটি ক্রমাগত করার কারণে সম্পূর্ণরূপে নরক-সমান অধ্ব:পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছে। তবুও তাদের ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তিমূলক প্রচারাভিযান সত্ত্বেও এখন এই জোয়ার অনেকটা  ঘুরে গেছে, কারণ আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে শীর্ষ ট্রেন্ড হিসাবে অবস্থান করছে।

ইসরায়েল এবং তার পশ্চিমা সমর্থকরা সম্ভবত অনুমান করেছিল যে বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ এবং গণহত্যা অবশ্যই  অবরুদ্ধ গাজাবাসীদেরকে হামাসের উপর ক্ষুব্ধ করে তুলবে। যার ফলে হামাসের বিরুদ্ধে একটি ক্ষিপ্ত বিদ্রোহ হবে। কিন্তু তাদের দেওয়া সমস্ত যন্ত্রণা সত্ত্বেও, গাজাবাসীরা প্রতি মুহূর্তে নিষ্ঠুর মৃত্যু ও ধ্বংসের মুখোমুখি হওয়ার পরও পাহাড়ের মতো দৃঢ় এবং সিংহের মতো প্রতিরোধী হয়ে আছে। গাজার তরুণ-তরুণী, ছেলে-মেয়ে ও শিশুদের উজ্জ্বল মুখে হামাসের বিরুদ্ধে কোনো হতাশা নেই এবং কোনো ক্ষোভ নেই। কিছু সাহসী মিডিয়া কর্মীরা তাদের সাথে থেকে তাদের সমস্ত অভিযোগ, সমস্ত দুঃখ ও যন্ত্রণার কথা তুলে ধরছে; সবশেষে তারা  বলছে, আলহামদুলিল্লাহ। গোটা বিশ্ব গাজাবাসীদের ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং তাদের সাহসিকতাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

গ্রেট ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির অপরাধমূলক যোগসাজশে জায়নবাদী সন্ত্রাসীদের দ্বারা যাদের শিকড় উপড়ে ফেলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিরা হচ্ছে এমন একটি জাতি। ৪০ লক্ষ ফিলিস্তিনি প্রতিবেশী আরব দেশে উদ্বাস্তু হয়েছে এবং কয়েক মিলিয়ন ইউরোপ এবং আমেরিকাতে গেছে এবং তারা এই সকল ভূখন্ডে আরব ও মুসলিম প্রবাসীদের একটি বড় অংশ গঠন করেছে। প্রায় দশ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি মুসলিম তাদের বাড়িঘর ছেড়ে গাজা ও পশ্চিম তীরে আশ্রয় নিয়েছে।


৭৫ বছরেরও বেশি সময় বয়ে গেছে এবং ইসরায়েল কর্তৃক এই জাতিগত নির্মূল এবং ফিলিস্তিনিদের উপর গণহত্যামূলক আচরণের নীরব দর্শক হয়ে আছে সমগ্র বিশ্ব। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বিশ্ব সংস্থাসমূহ তাদের নিজেদেরকে এখানে খুব মন্দভাবে ব্যর্থ হিসাবে প্রমাণ করেছে। এছাড়া ফিলিস্তিনের দুর্দশার জন্য মার্কিন-গোঁড়ামিপূর্ণ পদ্ধতির উল্লেখ করা নিস্প্রয়োজন মনে করছি।


পরবর্তীতে কিছু মুসলিম ও আরব দেশ যেমন তুরস্ক, বাহরাইন এবং জর্ডানের মতো  রাষ্ট্রগুলো ইহুদিবাদী রাষ্ট্র থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করার সাহস করে। এখন গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী এবং হামাস-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকান ও পশ্চিমা মহলে জল্পনা চলছে। ইসরায়েলের দুষ্ট পরিকল্পনা হল পুরো গাজার জনগণকে বাধ্য করে মিশরের সিনাই মরুভূমিতে বাস্তুচ্যুত করবে। এই জায়নবাদী দাবিকে সমর্থনকারী আমেরিকানরাও মিশরকে তার সমস্ত দেনা পরিশোধের বিনিময়ে সেই দর কষাকষি গ্রহণ করতে প্ররোচিত করে এই সম্ভাবনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এখন পর্যন্ত মিশর এবং জর্ডান দ্ব্যর্থহীনভাবে এই ধারণার বিরোধিতা করেছে এবং ফিলিস্তিনিরাও এই অশুভ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে অস্বীকার করছে। অর্থাৎ বলা যায় আরো একবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পশ্চিমা দেশসমূহ এবং তাদের আরব মিত্রদের মধ্যে সাইকস-পেকট নামক একটি গোপন চুক্তির মাধ্যমে অটোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে একমত করিয়েছিল, যাতে উল্লেখ ছিল যে, যুদ্ধের পর পশ্চিমা শক্তিসমূহ আরব অঞ্চল সমূহ তাদের আরব বন্ধুদের কাছে হস্তান্তর করবে, কিন্তু তা না করে তার পরিবর্তে তারা এসব অঞ্চল নিজেরদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। এই পশ্চিমা প্রতারণার দ্বারা ভুক্তভোগী হওয়ার ফলশ্রুতিতে আরবরা বিদ্রোহ করে, যার ফলে সমগ্র একীভূত আরব অঞ্চল ছোট ছোট রাজ্য ও শেখ শাসিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলে পরিণত হয়। এখন ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও একটি নাকবা বা বিপর্যয় শুরু হয়েছে। কারণ ইসরায়েল বিশ্বাস করে যে পশ্চিম তীর বাইবেলের প্রতিশ্রুত জমির একটি অংশ এবং তারা এটি ফিলিস্তিনিদের দিতে চায় না।

ব্লিঙ্কেন তৃতীয়বারের মতো ইসরাইল সফর করে, সেখানে তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে আমেরিকা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে পুরোপুরি সমর্থন ও সহযোগীতা করছে। আমি ভাবছি এই ভন্ডরা কি আজীবনই এটা ভুলে থাকবে যে, শুধু ইসরাইল নয় ফিলিস্তিনিদেরও নৃশংস শিশু হত্যাকারী ও দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার আছে। তার সফরের লক্ষ্য সম্ভবত মিশর এবং জর্ডানের মতো অঞ্চলের দেশসমূহেকে বিশাল আর্থিক সাহায্যের প্রলোভন দেখিয়ে ২ মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে সিনাই মরুভূমিতে গ্রহণ করার জন্য চাপ দেওয়া। এটাই নেতানিয়াহুর মূল পরিকল্পনা এবং আমেরিকা এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং দুষ্ট গেমপ্ল্যানের সাথে জড়িত।


ব্লিঙ্কেন তুরস্কে তার সাম্প্রতিক সফর শেষ করেছিলেন, যখন রাষ্ট্রপতি এরদোগান একটি অভ্যন্তরীণ সফরে ছিলেন বলে তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে খুব ঠান্ডাভাবে গ্রহণ করেছিল। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে কড়া প্রশ্ন করেন, তিনি (ব্লিঙ্কেন) কি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে এসেছেন নাকি ইহুদি হিসেবে এসেছেন। ব্লিঙ্কেন উত্তর দিলেন, "মানুষ হিসাবে।" পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে চেম্বারে তাকে অভ্যর্থনা জানান, সেখানে একটি ফিলিস্তিনি পতাকা এবং আল-আকসা মসজিদের ছবিও ছিল। সম্ভবত এই পররাষ্ট্র সচিব তুরস্ক থেকে তার যথাযথ উত্তর পেয়েছিলেন, তাই তিনি আর এই  তুর্কি প্রতিপক্ষের সাথে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়ার সাহস করেননি এবং তাড়াহুড়ো করে আঙ্কারা ছেড়ে চলে যান৷


সবশেষে, আমি নিম্নরূপ কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রস্তাব করা আবশ্যক মনে করছি:

১. ইসরায়েল এবং তার সমর্থনকারী পশ্চিমা শক্তির পরিকল্পনা মোতাবেক হামাসকে ধ্বংস করে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। ইরান, হিজবুল্লাহ, মালয়েশিয়া, তুরস্ক এবং কাতারের মতো ফিলিস্তিনের সহযোগী শক্তি সমূহ একতাবদ্ধ হয়ে এটা নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত।

২. আরব দেশ সমূহে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের সাথে নিয়ে ফিলিস্তিনি প্রবাসীদের অবশ্যই স্বাধীন ফিলিস্তিনের জন্য জোরালো এবং ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তুলতে হবে।

৩. হামাস এবং পিএ অবিলম্বে একে অপরের সাথে ঐক্যদ্ধ হতে হবে এবং গাজা ও পশ্চিম তীরের বিদ্যমান সকল দল মিলে যৌথ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এবং ইসরায়েলকে ১৯৬৭ সালের সীমান্তে ফিরে যেতে হবে এবং পুরো পশ্চিম তীর খালি করতে হবে এবং ফিলিস্তিনি ভূমিতে সমস্ত অবৈধ ইহুদি বসতিও ভেঙে দিতে হবে।

৪. সকল সাধারণ জনগণের সমর্থন এবং আরব দেশসমূহের নৈতিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক সহায়তায় অবিলম্বে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণা করা উচিত। আরব লীগ, ওআইসি এবং সমস্ত প্রধান মুসলিম দেশ সমূহের অবিলম্বে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত এবং বাকি বিশ্বের দ্বারা এর অনুমোদন ও স্বীকৃতির  জন্য প্রচেষ্টা করা উচিত। যেমন আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিশ্ব ধীরে ধীরে একইভাবে তালেবানদের স্বীকৃতি দিচ্ছে। অপ্রমাণিত কিছু প্রতিবেদন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তুরস্ক এই সকল লক্ষ্য অর্জনের দিকে এককভাবে পদক্ষেপ নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে; যদি এটি হয়, তাহলে তা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।


লেখক : ড. মোহাম্মদ গিত্রিফ

ডঃ মোহাম্মদ গিত্রিফ একজন ইসলামী পন্ডিত, লেখক এবং সম্পাদক। তিনি ইদারা তাহজিবুল আখলাক, আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, আলীগড়-এর গবেষণা সহযোগী। একইসাথে তিনি নয়াদিল্লিতে ফাউন্ডেশন ফর ইসলামিক স্টাডিজের পরিচালক।

অনুবাদ: তারেক হাসান

সূত্র : রেডিয়েন্স নিউজ

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


মুসলিম বিশ্ব বিভাগের সর্বাধিক পঠিত


শামীম সুলতানা একজন তরুণ মুসলিম মহিলা, সিঙ্গাপুরের নাগরিক এবং তিনি কায়...

মুসলিম বিশ্ব | 2023-06-21 22:32:39

তুর্কিয়ের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোগান জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাং...

মুসলিম বিশ্ব | 2023-05-23 09:44:54

১৯৯৫ সালে, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার স্রেব্রেনিকাতে প্রায় ৮ হাজার বসনিয়...

মুসলিম বিশ্ব | 2023-07-15 19:48:15

সুদান ভেঙ্গে আবারও নতুন দেশের উদয় হবে বলে ইসরাইল আশা করছে

মুসলিম বিশ্ব | 2023-04-29 02:07:05

রাশিয়ার বৃহত্তম ঋণদাতা Sberbank-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওলেগ গনিয...

মুসলিম বিশ্ব | 2023-07-14 03:30:52

২৮ জুন স্টকহোম সেন্ট্রাল মসজিদের বাইরে কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে বিশ্বব...

মুসলিম বিশ্ব | 2023-07-01 04:57:28

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) ২০২৩ সালকে একটি একটি কঠিন অর্থনৈতিক বছর...

মুসলিম বিশ্ব | 2023-06-13 23:28:54

রাজধানী খার্তুম, দারফুর ও কর্ডোফান রাজ্যে হত্যা, লুটপাট এবং ধর্ষণ সহ ন...

মুসলিম বিশ্ব | 2023-08-30 12:58:03