কর্ণাটকে প্রথম ধাপে মুসলিমদের বুদ্ধিদীপ্ত ভোট
মোহাম্মদ আথেরুল্লা শরীফ
Published: 2024-04-29 23:06:50 BdST | Updated: 2024-05-18 21:27:13 BdST
[ভারতে লোকসভা নির্বাচন চলছে। শুরু হয়েছ ১৯ এপ্রিল, শেষ হবে ১ জুন, ২০২৪। সাত পর্যায়ের মধ্যে আজ শুক্রবার ২য় পর্যায়ের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৫ পর্যায়ের ভোট শেষে ৪ জুন ভোট গণনা শুরু হবে। ইতিমধ্যে সহিংসতার কারণে মণিপুরের ১১ কেন্দ্রে ভোট বাতিল করা হয়েছে। নাগাল্যান্ডের ৬ জেলায় ৪ লাখ ভোটারের একজন ভোটারও তাদের দাবী না মানায় এ নির্বাচনে ভোট দেয়নি। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৯৭ কোটি, এর মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশ মুসলিম, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি। ঐতিহাসিকভাবে মুসলিমদের কাছে তুলনামূলক প্রিয় দল হচ্ছে কংগ্রেস। লোকসভার ৫৪৩ টি আসনের ১৫টিতে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে আরও৩৫টি আসন আছে যেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ না হলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় রয়েছে এবং নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করে। তবে বিশেষ ভাবে কর্ণাটকের মুসলিমরা অতীতের চেয়ে আরো বেশি গণতন্ত্র সচেতন ও দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে যুক্ত হচ্ছে। সম্ভবত কর্ণাটকের মুসলিমরাই ভবিষ্যতে ভারতীয় মুসলিমদেরকে পথ দেখাবে। -অনুবাদক ]
২৯ এপ্রিল : কর্ণাটকে অনুষ্ঠিত সংসদীয় নির্বাচনের প্রথম ধাপে, ভোটারদের ভোটদান বেশ ভাল ছিল, বিশেষ করে মুসলিম ভোটারদের। নতুন ভোটার তালিকাভুক্তি থেকে শুরু করে অনুপস্থিত যোগ্য ভোটারদের পুনঃনিবন্ধন করা, ভোটার স্লিপ বিতরণ করা এবং বুথে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় মুসলিম সামাজিক কর্মী ও সুশীল সমাজের গোষ্ঠী সমূহ বেশ ভাল ভূমিকা রেখেছে। তাদের কর্মক্ষমতা গভীর ছাপ ফেলেছে। বেশিরভাগ মুসলিম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এবং লোকেরা প্রায় সম্পূর্ণরূপে ভোটদানে অংশ নিয়েছিল। সকাল ৭টার আগে দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
যদিও, রাজ্যের গত বিধানসভা নির্বাচনের মতো, এইবারও ফ্যাসিবাদী শক্তির কাছ থেকে অনেকগুলি অত্যন্ত উস্কানিমূলক প্রকাশ্য ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা এসেছিল তবুও মুসলিমদের কাছ থেকে খুব বুদ্ধিমান এবং শীতল প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। বরং ভোটকেন্দ্রে বিপুল উপস্থিতি ঘৃণামূলক প্রচারণার উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়েছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা যে শান্ত-চিন্তা ও ধৈর্য্য প্রদর্শন করেছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
অধিকাংশ মসজিদে জুমার খুতবা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার গুরুত্ব, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে মুসুল্লিদের ভালভাবে বুঝানো হয়েছিল। ভোটার আইডি কার্ড তৈরিতে মসজিদ পরিচালনা কমিটি সম্পূর্ণভাবে জড়িত ছিল। বড়দের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে দেখা গেছে মহল্লার মুসলিম যুবকদের।
বিভিন্ন মুসলিম মহিলা সংগঠন বস্তি এলাকার মহিলাদেরকে বুথে পৌঁছানোর জন্য অনুপ্রাণিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বেশ কয়েকটি এলাকায়, বিশেষ করে বেঙ্গালুরু শহরের তিনটি নির্বাচনী এলাকায় পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যা বেশি ছিল। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, বেঙ্গালুরু দক্ষিণে ৫৪.১৭ শতাংশ মহিলা ভোটার ভোট দিয়েছেন, পুরুষ ভোটারদের চেয়ে বেশি। বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালে ৫৪.৮৭ শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন এবং বেঙ্গালুরু উত্তর কেন্দ্রে ৫৫.৪৫ শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন৷
ভোটে ওলামা মাশায়েখ ও আলেম সমাজের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমীর-ই-শরীয়ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের প্রধানগণ এই সময়ে জনগণকে শিক্ষণ ও অনুপ্রাণিত করতে চেষ্টার ত্রুটি করেনি।
সুত্র : রেডিয়েন্স নিউজ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: