কার হজ করা উচিত?


মুহাম্মদ ফাতি
Published: 2024-06-01 15:11:40 BdST | Updated: 2024-07-04 04:55:07 BdST

হজ ইসলামের ৫ম স্তম্ভ। হজের নতুন মৌসুম যতই ঘনিয়ে আসছে; কে এই মহান ইবাদত করতে বাধ্য তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নিম্নোক্ত শর্ত পূরণকারী নর-নারীদের উপর হজ ফরজ:

১. মুসলিম

ইবাদতসমূহ শুধুমাত্র মুসলিমদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়। অমুসলিমরা যদি নামায, রোজা, হজ বা ওমরা পালন করে, তবে তাদের থেকে তা কখনই গ্রহণ করা হবে না। যেহেতু প্রথম এবং প্রধান প্রয়োজন হচ্ছে মুসলিম হওয়া।

২. বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছা

বয়ঃসন্ধিকাল প্রাপ্তি দ্বিতীয় শর্ত। ছোট ছেলে-মেয়েদের হজ বা ওমরাহ করতে হবে না। হজ ও ওমরাহ পালনে তাদের পরিবারের সাথে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া গ্রহণযোগ্য এবং পুরস্কৃত বিষয়। তবে তাদের বয়ঃসন্ধি বয়সে পৌঁছানোর পরে তাদের আবার হজ এবং উমরা করতে হবে। সাধারণত অন্তত ১৫ বছর বয়সে পৌঁছানো, বীর্যস্খলন, নারীদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব ইত্যাদিই বয়ঃসন্ধির চিহ্ন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

৩. মানসিক সুস্থতা

উন্মাদ ব্যক্তি তার মানসিক সুস্থতা ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত তার ইবাদাত করার প্রয়োজন নেই।

৪. সক্ষমতা থাকা

হজ কেবলমাত্র সামর্থ্যবানদের জন্য আবশ্যক। এ যোগ্যতা বিবেচনা করা হয় তিনটি বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে:

স্বাস্থ্য

যারা অসুস্থ এবং সুস্থ হওয়ার আশা নেই বা ভবিষ্যতে হজ করতে সক্ষম হবেন না বা যারা এমন বৃদ্ধ হয়েছেন যে হজ করার সাধ্য নেই, তাদের হজ করা থেকে মাফ করা হয়। তবে আর্থিকভাবে সক্ষম হলে তাদের পক্ষ থেকে কাউকে হজ করতে পাঠাতে হবে।

আর্থিক সামর্থ্য

হজের খরচ বহন করতে সক্ষম হওয়া এবং তাদের অধীনস্তদের জন্য যথেষ্ট অর্থ রেখে যাওয়া উচিত। হজ বা ওমরাহ পালনের জন্য মুসলিমদের ঋণ করা উচিত নয়।

হজ ও ঋণ

ঋণগ্রস্তদের ওপর হজ ফরজ নয়। যদি কারো দীর্ঘমেয়াদী ঋণ থাকে এবং তাদের প্রতি মাসে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয়, যদি তারা সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দেয় এবং হজ্জ করার জন্য তাদের কাছে কিছুই অবশিষ্ট না থাকে তবে তাদের উপর হজ্জ ফরজ হবে না। কিন্তু যদি তারা শুধুমাত্র তাদের মাসিক পাওনা পরিশোধ করে এবং তারপর হজ্জ করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ থাকে তবে তাদের হজ্জ করা উচিত কারণ এটি তাদের উপর ওয়াজিব। যদি কেউ ঋণগ্রস্ত হয় এবং তার পাওনাদার তাকে হজে যাওয়ার অনুমতি দেয় তবে তারা হজ করতে পারবে। যদি কেউ হজ করার জন্য ঋণ নেয় এবং হজ করে, তবে তার হজ বৈধ, যদিও তাদের এটি করা আবশ্যক ছিল না এবং তাদের উপর হজ ফরজ ছিল না।

নিরাপত্তা

যদি হজের জন্য ভ্রমণ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়, যেমন যুদ্ধ বা এরকম কিছু অবস্থা বিরাজ করে, তবে তখন হজ করতে হবে না কারণ তারা নিরাপদে তা করতে অক্ষম।


লেখক : মুহাম্মদ ফাতি

মুহাম্মাদ ফাতি এ্যাবাউট ইসলামের শরীয়াহ পাতার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক। এবং তিনি আমেরিকান কুরআন ইনস্টিটিউট এর একজন প্রাক্তন ইমাম ও শিক্ষক।

সূত্র : এ্যাবাউট ইসলাম

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


ইসলামী বিষয়াবলী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত


অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে সজীব, তাদের কর্মের কারণে সন্তুষ্ট, তারা থাকবে...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2018-04-23 23:36:39

রাসূল স. বলেছেনঃ বেশি বেশি কোর’আন তেলা’ওয়াত কর, কেননা হাশরের দিন এ কো...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2018-08-15 23:24:11

হযরত মুয়াজ (রা.) রাসূল (সা.) এর কাছ থেকে কিয়ামতের দিন প্রথম তিনজন জাহা...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2018-02-22 00:11:13

মুসলিম উম্মাহর সদস্য হিসেবে আপনার উচিত সর্বদা জ্ঞান অর্জনে লিপ্ত থাকা।...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2018-06-29 08:34:21

"হে আল্লাহ্, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা, দুঃখ, অক্ষমতা, অলসত...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2018-05-06 13:46:07

হজ্জ্ব ইসলামের একটি মৌলিক ইবাদত। হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রতিবছর জি...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2018-08-16 23:47:11

হযরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, সহীহ বুখারী ও মুসলিম উভয় হাদীসগ্রন্থেই...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2018-06-22 23:12:36

রাসূল (সা.) এর এক হাদীসে কেয়ামতের নিকটবর্তী হওয়ার লক্ষন হিসেবে দশটি নি...

ইসলামী বিষয়াবলী | 2019-04-10 23:46:12